Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home8/amjahcom/public_html/wp-content/themes/photology-themes/lib/common-function.php on line 907
by Amjad Akash, January 22, 2015 , In Graphic Design

আধুনিক কলার দশ বিচিত্র

[metaslider id=508]
home_body_art_illusion_hand
।মিজানুর রহমান।
মানবসভ্যতার পূর্ব থেকেই চিত্রশিল্পের বিচরণ। বলা চলে মানুষের বয়সের সমানই চিত্রকলার বয়স। এই শিল্পে কিছু ভিন্ন ধারা প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। প্রাচীন গুহামানবেরা যেভাবে গুহায় চিত্রাঙ্কন করতো তেমনই আধুনিক সময়েও অনেক ধরনের কলার প্রচলন হয়েছে।

এনামরফসিস
এটি এমন একটি চিত্রকলা যা একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে দেখলেই কেবল বুঝা যাবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সঠিক ছবি বুঝতে আয়নাতেও দেখতে হয়। ১৫ শতকে এ ধরনের শিল্পের প্রথম উদাহরণ রেখে গেছেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। রেনেসাঁ যুগে এ ধরনের চিত্রকলার প্রচুর উদাহরণ মেলে। এটি থ্রিডির একটি কৌশল, এই কৌশল স্ট্রিট আর্টিস্টরা রাস্তায় গর্ত বা ফাটলের ছবি আঁকতে ব্যবহার করে থাকে। এই কৌশলের সবচেয়ে মজার উদাহরণ হচ্ছে এনামরফিক টাইপোগ্রাফি। গ্রাফিক ডিজাইনিংযের ছাত্র জোসেফ ইগান ও হান্টার থমসন নিজেদের কলেজের গলিতে বিকৃত লেখার একটি ছবি এঁকেছে যা একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকেই কেবল স্পষ্ট বুঝা যায়।

ফটোরিয়ালিজম
ফটোরিয়ালিস্ট ছবি বলতে বুঝায় একেবারে বাস্তব ছবির মত ছবি। ১৯৬০ সালের প্রাক্কালে এমন একটি পরিবর্তন শুরু হয়। এই শিল্পীরা এতটাই দক্ষ যে একটি ক্যামেরা যেভাবে ছবি তোলে তারাও তেমনই আঁকতে সক্ষম। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিষয়ের কিছুই বাদ পড়ে না। ছবি অঙ্কনকে অনেকে সুপার রিয়ালিজম, বা হাইপার রিয়ালিজম বলে থাকে।
এমন কিছু ফটোরিয়ালিস্ট শিল্পী আছেন যাদের ছবি দেখলে আপনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। তার মধ্যে রিচার্ড এস্তাস, ওড্রে ফ্লাক, রবার্ট বিকেল, চাক ক্লোজ ও ডুয়ানি হ্যান্সন অন্যতম।

‘নোংরা গাড়ি’র শিল্প
যদিও এমন আর্টকে অসাধারণ কিছু বলা হয়ে থাকে না, তবুও গাড়ির নোংরা কাঁচের ওপর এমন চমৎকার আর্ট দেখলে আপনার মনে হতে পারে, যদি আমার জীবনটাও এমন ধুলিময় হতো, সাজিয়ে নিতাম নিজের মতো করে।
আমেরিকান গ্রাফিক ডিজাইনার স্কট ওয়েড ধুলিমাখা গাড়ির কাঁচের ওপর ছবি একেই বিখ্যাত হয়েছেন। তিনি আঙ্গুল, নখ ও কাঠি ব্যবহার করে মোটা ধুলিমাখা গাড়ির কাঁচের ওপর সৃষ্টি করেন অসাধারণ সব চিত্রকর্ম। তবে এই আর্টের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি ধোয়ার ব্যবসায়ীদের নতুন ব্যবসা নিয়ে ভাবতে হবে।

বডি ফ্লুইড আর্ট
এটা একেবারেই উদ্ভট ধারা বলা চলে। প্রাণীর রক্ত, মানব মূত্র ইত্যাদি ফ্লুইড ব্যবহার করে ছবি আঁকা হয়। অস্ট্রিয়ান শিল্পী হারমান নিসচ মূত্র ও প্রচুর পরিমাণে প্রাণী রক্ত ব্যবহার করে ছবি এঁকেছিলেন। ছবিটি ছিল তার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঘটনা থেকে নেওয়া। এজন্য তাকে বছরে পর বছর ধরে মামলার ঘানিও টানতে হয়েছিল। তবে এমন আর্টিস্ট তিনি একা নন, ব্রাজিলের ভিনিচিয়াস কেসাডা এমন ছবি আঁকেন।

অঙ্গ যখন তুলি
শুধু শরীরের তরলই নয়, ৬৫ বছর বয়সী আমেরিকান চিত্রশিল্পি টিম প্যাচ আরও উদ্ভট পদ্ধতিতে ছবি আঁকছেন। ছবি আঁকার ব্রাশ হিসেবে তিনি ব্যবহার করেন তার পুরুষাঙ্গ, অণ্ডকোষ হতে শুরু করে আরও অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নিজের নামও রেখেছেন প্রিকাসো। এই তালিকায়ও তিনি একা নন, কিরা আয়ান ভার্জেগি নামের এক নারী চিত্র শিল্পি নিজের স্তন ব্যবহার করে ছবি এঁকে থাকেন। আনিকে জিহ্বা ব্যবহার করে ছবি আঁকেন।

রিভার্স থ্রিডি
যেখানে এনামরফোসিস দ্বিমাত্রিক জিনিসকে ত্রিমাত্রিক দেখাচ্ছে। সেখানে রিভার্স থ্রিডি করছে ঠিক উল্টোটা। এই ধরনের ছবিতে ত্রিমাত্রিক কোনও বস্তুকে দ্বিমাত্রিক হিসেবে দেখানো হয়। এই চিত্রকলায় সবচেয়ে পরিচিত মুখ লস এঞ্জেলেসের এলেক্সা মেড। ২০০৮ সাল থেকে তিনি এই পদ্ধতি রপ্ত করছেন। ২০০৯ সালের শেষের দিকে তিনি এটি প্রদর্শন করেন। তিনি বিষাক্ত পদার্থমুক্ত এক্রেইলিক রঙ দিয়ে ঢেকে দেন নিজেকে। এরপর বসে পড়েন ক্যানভাসের সামনে। দেখে মনে হয় তিনি নিজেও বুঝি হাতে আঁকা। এই কলার পারদর্শীদের মধ্যে আছেন সিনথিয়া গ্রেগ।

ছায়া চিত্র
ঠিক কবে থেকে মানুষ ছায়াকে শিল্প হিসেবে ব্যবহার করছে তা বলা মুশকিল। তবে আধুনিক ছায়া শিল্পীরা একে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। শিল্পীরা আলোর বিপরীতে ব্যক্তি বা বস্তুকে সঠিক স্থানে রেখে একটি অসাধারণ ছায়া ছবি তৈরি করে থাকেন। এই শিল্পে উল্লেখযোগ্য নাম হচ্ছে কুমি ইয়ামাশিতা, ফ্রেড এরেদেকেন্স। ছায়ার রোমাঞ্চকর অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে টিম নোবেল ও সু ওয়েবস্টার অসাধারণ কিছু ছবি এঁকেছেন। তাদের কাজের মধ্যে অন্যতম ডার্টি হোয়াইট ট্র্যাশ।

রিভার্স গ্রাফিতি
ডার্টি কার আর্টের মত এই আর্টও ধুলো থেকেই তৈরি হয়। তবে এটি দেয়ালের ময়লা পরিষ্কারের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। অনেকটা শৈল্পিক কায়দায় ধুলো পরিষ্কারের মত। এই পদ্ধতিকে অনেকে ক্লিন ট্যাগিংও বলে থাকেন। পদ্ধতিটির সূচনা করেছেন ইংরেজ চিত্রশিল্পী পল কার্টিস। আশ্চর্যজনকভাবে এই শিল্প কিছু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কার্টিসকে বেশ কয়েকবার পুলিশের হয়রানির শিকার হতে হয়েছ। তবে থেমে নেই শিল্পীরা, আরেক ব্রিটিশ বেন লঙ, এই শিল্পে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি আঙ্গুল দিয়ে ট্রাকের ক্ষয়ে যাওয়া অংশে জমা ময়লা পরিষ্কার করে ছবি তৈরি করেন। তার ছবি ছয় মাসকাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

বডি আর্ট ইলুশন
শরীরের ছবি আঁকা নতুন কিছু নয়। মায়া সভ্যতা থেকে শুরু করে মিশরীয় সভ্যতা সবাই শরীরে ছবি এঁকেছে। আধুনিক যুগে থ্রিডির ব্যবহারে কিছুটা বিভ্রম এই শিল্পে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। এই কৌশলের দ্বারা মানুষকে প্রাণীর মতো দেখানো যায়। মানুষের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গর্তসহ আরও অনেক উদ্ভট ছবি আঁকা যায় এই পদ্ধতিতে।

লাইট পেইন্টিং
এই শিল্পের চর্চা প্রায় এক শতাব্দী আগে শুরু হয়েছে। তবে শুরুর দিকে এটিকে শিল্পকৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হতো না। ফ্রেঙ্ক ও লিলিয়ান গিলবার্থ ১৯১৪ সালে আলো ও ক্যামেরার সাহায্যে কর্মীদের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করতেন। ধারণকৃত আলোকচিত্র থেকে গবেষণা করে কাজকে আরও সহজ করর লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন তারা। এই পদ্ধতিই ১৯৩৫ সালে শিল্পে ঢুকে পড়ে। শিল্পী ম্যান রে ঘুর্ণয়মান আলোর মাঝে দাঁড়িয়ে একটি খোলা সাটার ক্যামেরার দ্বারা নিজের কিছু ছবি তোলেন। যা ছিল ওই ম্যান রে’র স্বাক্ষরের ছবি। যেটিকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এলোমেলো আলো বলেই ধরা হতো। রে’র পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন এই ধারার প্রবর্তন হয়েছে। আলোকচিত্রী ও চিত্রশিল্পী জন মিলি, হেনরি মেটিসে, বারবারা মরগান ও জ্যাক ডিলানো এই ধারার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। এমনকি পাবলো পিকাসোও এই ধারার চর্চা করেছেন। আধুনিক আলোকচিত্রশিল্পীদের মধ্যে মাইকেল বোশাঙ্কো, ট্রেভর উইলিয়ামস ও জ্যান লিওনার্দো অন্যতম।

No Comments


Leave a Reply

Your email address will not be published Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

*