বরেণ্য শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর তিরাশিতম জন্মবার্ষিকী আগামী ৯ মার্চ ২০১৫। বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এই উপলক্ষে দুটি স্মারক প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। বেঙ্গল গ্যালারি অব্ ফাইন আর্টস মাসিক সাহিত্যপত্রিকা কালি ও কলমের সচিত্রকরণে ব্যবহৃত তাঁর মূল ড্রইংসমূহ নিয়ে ‘কালি ও কলমে কাইয়ুম চৌধুরীর রেখালেখ্য’ শীর্ষক নির্বাচিত রেখাচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সংগ্রহ থেকে নির্বাচিত চিত্রকর্ম নিয়ে বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জ আয়োজন করছে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর। আগামী ৯ মার্চ সোমবার সন্ধ্যা ৬ টায় বেঙ্গল শিল্পালয়ে এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, শিল্পী রফিকুন নবী এবং শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী যৌথভাবে প্রদর্শনী দুটি উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখবেন কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত এবং শিল্পীপুত্র মইনুল ইসলাম জাবের। বেঙ্গল গ্যালারির প্রদর্শনীতে মোট চিত্রকর্মের সংখ্যা প্রায় ১০০ টি এবং প্রদর্শনী আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ও বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের প্রদর্শনীতে চিত্রকর্মের সংখ্যা প্রায় ২৫ টি এবং প্রদর্শনী আগামী ২৮ মার্চ ২০১৫ প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী দীর্ঘ ষাট বছরের নিরলস চিত্রসাধনার মধ্য দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন এদেশের শীর্ষ শিল্পীদের অন্যতম। তার চিত্রপটে উঠে এসেছে আবহমান বাংলার অনির্বচনীয় সৌন্দর্য। বৈচিত্র্যময় শিল্পযাত্রায় চিত্রকলা সৃজনের পাশাপাশি গ্রন্থের প্রচ্ছদ, অলংকরণ, মুদ্রণ পরিপাট্য, আমন্ত্রণপত্র, পোস্টার ও লোগো ডিজাইনসহ নানা ক্ষেত্রে তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। বিরতিহীন চর্চায় ও সাধনায় এ ক্ষেত্রে দেশের শীর্ষ গ্রাফিক্স শিল্পীতে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী তাঁর অনন্য চিত্রভাষার জন্য বিখ্যাত যা তিনি বিভিন্ন লোকজ মোটিফের নান্দনিক ব্যবহারের মাধ্যমে নির্মান করেছিলেন।
১৯৫৪ সালে তিনি গভ. আর্ট ইনস্টিটিউট (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দেলনে তাঁর সক্রিয় অংশগ্রহন ছিল। একুশে পদক পান ১৯৮৬ সালে। একই সঙ্গে কাইয়ুম চৌধুরী দেশের একজন স্বনামধন্য অঙ্কনশিল্পী ও নকশাবিদ ছিলেন, যিনি দশবার ‘ন্যাশনাল বুক সেন্টার পুরষ্কার’ লাভ করেছেন। তিনি ৩৭ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে শিক্ষকতা করার পর ১৯৯৭ সালে অবসর গ্রহন করেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের শিল্পকলা ইতিহাসের এই প্রাণপুরুষের জীবনাবসান ঘটে।
No Comments