Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home8/amjahcom/public_html/wp-content/themes/photology-themes/lib/common-function.php on line 907
by Amjad Akash, March 12, 2015 , In Video Art

কিওকোর কাজে জীবনের সন্ধান

[metaslider id=961]

kyoko

জাপানী বুনন শিল্পী তাকাদা কিওকো

 

।শিবানী কর্মকার শিলু। টেক্সটাইল শিল্পী তাকাদা কিওকো জন্ম ১৯৬৩ সালে জাপানের ওসাকাতে থাকেন হিরোশিমায় জাপানি বুনন উল শিল্প নিয়ে কাজ করছেন প্রায় ত্রিশ বছর কিংবা তারও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে এসেছেন বহুবার প্রথম আসেন ১৯৮৮ সালে বাংলাভাষা রপ্ত করেছেন বেশ ভালো করে। পরিচিত হয়েছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া-আঞ্চলিকতার সঙ্গেও। বিশেষ সহযোগিতা পেয়েছন তার স্বামীর কাছ থেকে। যিনি আবার গবেষণা করেন বাংলাদেশ নিয়ে।

তার কাজের পরিধিতেই তুমুল এক আড্ডা জমে ওঠে তার সাথে। সুন্দর বাংলায় তিনি ব্যাক্ত করেন তার আত্মকথা। ‘ইউনিভার্সিটিতে গার্হস্ত্য বিজ্ঞানে পড়াশুনা করি। ওখানে টেক্সটাইল বিভাগে পড়ি। তখন থেকে কিংবা বলা যায় তারও আগে প্রায় ছোটবেলা থেকে উইভিং এর প্রতি আমার একটা আলাদা আগ্রহ ছিল। জাপানে ওয়েভিং শিক্ষার জন্য আর্ট স্কুল আছে, আর আছে গতানুগতিক কিছু ক্র্যাফ্টের কারকানা। টেক্সাইল স্কুলে যেতাম যেটাকে ঠিক আর্ট স্কুল বলা যায় না আবার ঠিক কারিগরি বিদ্যার স্কুলও না। আবার বলা যায় দুটো মিলিয়ে।

ইউনিভর্সিটিতে থাকাকালীন বন্ধ থাকলেই ছুটে যেতাম টেক্সটাইল স্কুলে। স্কুলটা ছিল চৌততে। সেটা ছিল এক হাজার বছরের পুরানো রাজধানী। সেখানে জাপানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক তৈরী হচ্ছে। সেই ঐতিহ্য এখনও বজায় আছে। চৌত টেক্সটাইল বলে একটা ব্র্যান্ড তৈরী হয়েছে। তো তখন ওখানে ফাইবার আর্টের বেশ প্রচলন। চৌততে তখন আধুনিক ফাইবার আর্টের ঘন ঘন প্রদর্শনী হচ্ছে। দেখতাম, সুন্দর! কিন্তু কোথায় যেন একটা ভাল না লাগা কাজ করছিল। তখন থেকেই ভাবছিলাম আমরা কি করতে পারি। প্রকৃতির একটা সুন্দর রূপ আছে। তার চাইতে সুন্দর কিছু করার দায় কাজ করতো নিজের মধ্যে। কষ্ট লাগতো হাজার কোটি পোকাদের প্রাণ দিয়ে তৈরী হচ্ছে আকষর্নীয় সব পোষাক। জীবন নষ্ট না করে, এক একটি পোকা মেরে না ফেলে কি করে উইভিং নিয়ে কাজ করা যায় এই ভাবনাটাই প্রতিনিয়ত ভেতরে কাজ করছিল। ওই চিন্তাটাই আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।‘

জাপানে উইভিংটা সে সময় করতেই হত। একটা জামা সুতা থেকে বুনতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগতো। এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষ বাধ্য ছিল এ কাজ করতে। কিন্তু পরবর্তিতে প্রযুক্তির সুবাদে মানুষ হাতে তৈরী পোশাকের বদলে মেসিনাইজ পোশাকে অভ্যস্থ হলো। কিন্তু কিওকো মনে করেন হ্যান্ড মেইড পোশাকের সঙ্গে মানুষের যে আত্মিক সম্পর্ক ছিল, সেটা পুরোপুরি ছিন্ন হলো। মেশিনের কাপড় প্রথম প্রথম সুন্দর লাগে, প্রডাক্ট বাড়ছে, হয়তো সস্তায় পাওয়াও যায় কিন্তু সেই আরাম বোধের ব্যাপার নেই।

মডার্ন পিরিয়ডে বা ১৯৮০ তে জাপান তখন অর্থনৈতিক ভাবে বেশ সমৃদ্ধ। পৃথিবীর সবকিছু কেনা যায়, এমন। তখন উইভিং আউট সোর্সিং হতে লাগলো। পরবর্তীতে সেলাইকৃত কাপড়ও আর জাপানে হত না। সেটাও সরাসরি আমদানী করা হতো।‘

আড্ডার ফাঁকে মাঝে মাঝে নিজের কাজও চালিয়ে যান কিওকো। বিভিন্ন কাপড়ের উপর নিজের তৈরী উল পেস্ট করে করে নিজের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আবার ফিরে আসেন আড্ডায়। উইভিং শুরু করেন ১৮/১৯ বছর বয়সে। এই কাজের মাধুর্যই তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। ফেল্ট নিয়ে কাজ করেন শিল্পী কিওকো।

আর্ট আর ক্র্যাফ্ট একটা ব্যাপার। এ বিষয়ে বলতে গেলে ক্র্যাফ্ট আসলে আর্টের একটা জার্নি।

উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি বৃত্ত আর্ট ট্রাস্টের আমন্ত্রণে এক মাসের (১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ ২০১৫) রেসিডেন্সি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন তাকাদা কিওকো । এরই মধ্যে “ফ্রম ওল টু ফেল্ট” শিরোনামে ২০,২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি তিন দিনের একটি ওয়ার্কশপ করান। ওয়ার্কশপে অংশ নেন আলি আসগর, অলকানন্দা সুব্রিতা, রিতু সাত্তার, শিরিন আক্তার টুসি, শুভ সাহা, তাসমিন চৌধুরী। কর্মশালায় শিল্পী কিওকো বিশেষভাবে শেখানোর চেষ্টা করেন ‘নুনো ফেল্ট’, যা উল থেকে কারুপন্য বা শিল্পকর্ম তৈরিই একটি ঐতিহ্যবাহী জাপানী পদ্ধতি।

আজ ১২ মার্চ ২০১৫ বৃত্ত আর্ট স্পেসে শুরু হচ্ছে রেসিডেন্সিকালীন তাকাদা কিওকোর’র করা শিল্পকর্ম নিয়ে ওপেন স্টুডিও। দর্শকদের জন্য যা খোলা থাকবে ১২ থেকে ১৪ মার্চ ২০১৫। এছাড়াও প্রদর্শনীতে থাকছে কর্মশালায় করা শিল্পীদের কাজও। কাজগুলোতে উল এবং ওয়েভিংয়ের বিভিন্ন টেকনিক ব্যবহার করে কিওকো ক্রাফট পন্যকে কিভাবে শিল্পকর্মে রূপান্তর করা যায় তারই যেন এক উজ্জ্বল উদাহরণ তৈরি করেছেন। যা আমাদের দেশে একেবারেই নতুন একটি মাধ্যম। মাধ্যমটি বাংলাদেশের সমকালীন শিল্পীদের কাজে বিশেষ সহযোগিতা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। মাধ্যমটির বিশেষত্ব হচ্ছে- এটি আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে যেমন নতুন দিগন্তের সুচনা করতে পারে, তেমনি সমকালীন চারুকলাতেও নিয়ামক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। আশা করছি বুনন শিল্পী কিওকোর কাজ শিল্পরসিক ও শিল্পবোদ্ধাদের শিল্পরস আস্বাদনে নব সম্ভাবনার সৃষ্টি করবে।

2 Comments


  • শিবানী কর্মকার শিলু,ধন্যবাদ। এরকম তথ্যবহুল লেখা আমাদের ভাবনার খোরাক দেবে।

    • shilu suhashini
      Reply Cancel Reply
    • April 5, 2015

    ধন্যবাদ আপনাকে হিমাদ্রি সরকার, আপনার অভিবাদন কিছুটা দায় বাড়িয়ে দিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published Required fields are marked *

You may use these HTML tags and attributes: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>

*